আশার আলো

0



আশার আলো

রফিক সাহেব ঢাকা জুরাইনের এক মেসের নতুন মেম্বার। মেস বলতে যা বোঝায় আসলে ঠিক তেমন নয়। / জন বেকার এবং / জন ছাত্র মিলে একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস। একজন কাজের খালা বাসার সকল কাজ করে দেন। মেস মেম্বার সবাই পালা করে বাজার করে দেন। রফিক সাহেবের নিকট এই বাজার করা ব্যাপারটা মোটেই পছন্দসই না। তবুও করতে হয়, কিছুই করার নেই। রফিক সাহেব সদ্য বি, পরিক্ষা দিয়ে চাকরির সন্ধানে ঢাকা এসেছেন। ঢাকার নতুন মেহমান। অচেনা শহরের পথঘাট অলিগলি কিছুই তার চেনা নাই জানা নাই। মেস বাড়ির এক রুমে দু'জন থাকেন। রফিক সাহেবের ভাগ্য সুপ্রসন্ন জন্য যে, তার রুমমেট শফিক সাহেব অত্যন্ত অমায়িক বন্ধুবাৎসল মানুষ। / দিনেই সে আপন করে নিল। তার বাড়ি বরগুনার ছোট ভাইজোড়া গ্রামে।

#রফিক সাহেব প্রতি দিন পত্রিকা পড়েন আর দরখাস্ত করেন। প্রতিদিনের রুটিন ওয়ার্ক এটা। এর মধ্যে /৪টা টিউশনি জোগাড় করে দিয়েছেন শফিক সাহেব। সকাল বিকাল ছাত্র পড়ানো, দরখাস্ত করা আর সময়সূচি অনুযায়ী চাকরির পরিক্ষা দেয়া। এভাবে তিনটি বছর অতিবাহিত হলেও চাকরি তার কপালে জুটলো না। হতাশার তিমিরে নিমজ্জিত শফিক সাহেব হাল ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন মামা>ফোন>টাকা এর বাইরে কোনো কিছু হবার জো নেই।

#বাড়িতে মা বাবা আর একটি বোন। বাবার বয়স হয়েছে। তার ব্যবসা বন্ধ প্রায়। তাঁদের কঠিন অবস্থা চলছে। যে কোনো ভাবেই হোক তাকে একটা কাজ/চাকরি পেতেই হবে, বাড়িতে টাকা পাঠাতে হবে প্রতি মাসে। রফিক সাহেবের রাতের ঘুম পাড়ানী মাসী হারিয়ে গেছে। লিখিত পরীক্ষা ভালোই দেন, কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় আর পাস করা হয় না। চাকরি যেন সোনার হরিণ। গল্পে আবির্ভাব হয়, বাস্তবে নয়!

#রফিক সাহেব দরখাস্ত করা বন্ধ করে দিয়েছেন। কি হবে বাজে খরচ করে!

তিনি যখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় ঠিক সেই সময় মায়ের চিঠি এলো। মা লিখেছেন যে, রফিক সাহেবের বাবা একটা পাত্রী ঠিক করেছেন যার বাবা মেয়ের সাথে "চাকরি যৌতুক" দিতে রাজি যদি আমরা রাজি থাকি। রফিক সাহেব ঝড়ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ মহাকাশে ঘনকালো মেঘের ফাঁকে এক টুকরো "আশার আলো" দেখতে পেলেন যেন!

--------------------------------চলবে।

Syed Shahidul Islam

সৈয়দ সহিদুল ইসলাম লায়ন।

উজিরপুর, বরিশাল।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)